শীত পেরিয়ে গরমের সময় চলেই এসেছে। এরই মাঝে দিনের বেলা ৩০-৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠে যাচ্ছে, সামনে গরম আরও বাড়বে। এই আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে না না সমস্যার একটি হচ্ছে ল্যাপটপের তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে ভূলে যাওয়া।
শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ার ফলে ল্যাপটপ কুলিং নিয়েও সমস্যা তেমন হয়না, তবে গরমে বারটা বাজতেও দেরী হয়না। চলুন দেখি কিভাবে ঠান্ডা রাখবেন আপনার যত্নের ল্যাপটপটি।
হয়ত ভাবছেন প্রথমেই আসবে বিছানায় রেখে না চালানো, বা কুলার ব্যবহার। কিন্ত না, আমি এখানে আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার থেকেই কিছু নতুন কথা আপনাদের বলতে চেষ্টা করবো এ ব্যাপারে।
১। ল্যাপটপটি বিছানায় রেখে চালানো থেকে আসলে কেউ আপনাকে বাধা দিতে পারবেনা, যদি না আপনি খুব সাবধানী ব্যাক্তি হন। সত্যি করে বললে আসলে আমরা ল্যাপটপ কিনিই অনেকটা বিছানায় আরাম করে ব্যবহার করবো বলে। অতএব, যেহেতু বিছানায় রাখা কেউ ঠেকাতে পারবেনা, আমরা উল্টো দিকেই যাই। বিছানায় যদি ব্যবহার করেনই:
- ভূলেও বালিশের বা কম্বলের মত জিনিষে ওপর রাখবেন না। অসমান যায়গা বা কাপড়-চোপরের ওপর তো নয়ই। খেয়াল রাখবেন যেন ফ্যানের ভেন্ট খোলা থাকে।
- অবশ্যই সম্ভব হলে কুলারের ওপর রাখুন, বিশেষ করে ভারী কাজ করবার সময়। এতে বিছানায় রাখার ফলে যে গরম জমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তা অনেকটাই কেটে যায়।
২। ল্যাপটপটি পরিস্কার করুন। শুধু ব্লোয়ার দিয়ে ধুলা পরিস্কারই নয়, নিজে বা অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে ল্যাপটপের ফ্যান, হিট সিঙ্ক খুলে পরিস্কার করিয়ে নিন। ওপরের ধুলা পরিস্কার করলে আপনার ল্যাপটপের কুলিং এর তেমন উন্নতি হবেনা কিন্তু এতে দেখতে পাবেন অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
৩। ল্যাপটপ এভাবে পরিস্কার করার পর থার্মাল পেস্ট ও বদলে নিন। এটি আপনার প্রসেসর, জিপিউ ও চিপসেটের থেকে হিট সিঙ্কে তাপ পরিবহন করতে বিশাল ভূমিকা রাখে, এর প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবেনা। তবে মজার ব্যাপারটি হচ্ছে এটি বেশ সহজলভ্য, আপনার পরিচিত দোকান থাকলে বিনামূল্যেই পেতে পারেন এটি। আর যদি কিনতেই হয়, তাহলে একেবারে সেরাটিরই তাম পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। তবে এতে যে পরিমাণ পেস্ট পাবেন তা ৫-৬ বার ব্যবহার করা যাবে, তাই ৩-৪জন মিলে কেনা শ্রেয়।
৪। বাংলাদেশের কচ্ছপগতির ইন্টারনেটের ফলে আমরা প্রায়ই যা করি তা হচ্ছে ডাউনলোড দিয়ে ল্যাপটপের ডিসপ্লে নামিয়ে রাখা। ল্যাপটপ পুড়ে যাওয়ার মূল কারণ এটি। আমরা অনেকেই জানিনা যে ল্যাপটপের কিবোর্ড দিয়েও বেশ অনেকটা হিট বেড়িয়ে যায়। অতএব, বেশী গরমের মাঝে ভূলেও এভাবে ডাউনলোড করবেন না – দরকার হলে ডিসপ্লে অফ করে লিড উঠিয়ে রাখুন। এই টিপস টি বিশেষ করে মেনে চলতে হবে ম্যাক ব্যবহারকারীদের – আমার নিজের ম্যাকবুকের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
৫। ল্যাপটপে যদি রেডিওন বা জিফোর্স জিপিউ থাকে, তাহলে সেটি বন্ধ রাখুন প্রয়োজনের বাইরে। ড্রাইভারের সেটিংস থেকে এটি করা সম্ভব। এতে প্রায় ৫০-৬০% কম গরম হবে ল্যাপটপটি। একই ভাবে হাই পারফর্মেন্স মোড ব্যবহার না করে ব্যালেন্সড বা পাওয়ার সেভিং মোড ব্যবহার করুন।
এর পরও, ৩৫-৩৯ ডিগ্রী তাপমাত্রার দিনে ল্যাপটপ পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক। সে ক্ষেত্রে কিছু অ্যাপ যেমন স্পীড ফ্যান বা ম্যাকের জন্য ফ্যান কন্ট্রোল ব্যবহার করে তাপমাত্রার দিকে নজর রাখুন, প্রয়োজনে বেশী গরম হয়ে গেলে অটো শাটডাউন অন করে নিন। অন্তত আপনার ল্যাপটপটি থাকবে নিরাপদে।